মানুষ মরিঙ্গা খাওয়ার দিকে ঝুঁকে পড়েছে কেন?

ইংরেজিতে ড্রাম স্টিক নামে পরিচিত ফলটি আগে অধিক মাত্রায় না হলেও আজকাল তরকারি হিসেবে খাদ্যে বহুল ব্যবহৃত হচ্ছে। সবাই খাচ্ছেও খুব মজা করে।

খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞানী, চিকিৎসাবিজ্ঞানী, উদ্ভিদবিজ্ঞানী, রসায়নবিদসহ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থার গবেষণায় দেখা গেছে, মরিঙ্গা বা শজনের পাতায় রয়েছে বহুবিধ পুষ্টি ও ঔষধি গুণ। এসব গুণ অন্য অনেক খাবারে নেই। তাই শজনের পাতাকে বলা হয় সুপার ফুড।

শজনের এই বহুবিধ পুষ্টি উপাদান ও ঔষধি গুণাগুণের কথা বিভিন্ন যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে সাধারণ মানুষের মধ্যে পৌঁছে গেছে এবং মানুষ মরিঙ্গা খাওয়ার দিকে ঝুঁকে পড়েছে।

যেভাবে একসময় মানুষ ঝুঁকেছিল জিংসেং, মাশরুম ও কালিজিরার দিকে। কিন্তু মরিঙ্গা বা শজনে পাতা খাওয়ার আগে কিছু বিষয় ভালোভাবে জেনে-বুঝে তারপর খেতে হবে।

রাস্তার পাশে, ইটখোলার পাশে, ইন্ডাস্ট্রিজের পাশে এখন প্রচুর শজনে চাষ হচ্ছে। এই শজনে পাতা স্বাস্থ্য ভালো করার চেয়ে ক্ষতি করবে বেশি। এ পাতার কার্বন শোষণক্ষমতা বেশি।

পুষ্টিসমৃদ্ধ উদ্ভিদ শজনে বহু শতাব্দী ধরে ঐতিহ্যগত ওষুধে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে যেখানে-সেখানে জন্মানো শজনে পাতা খাওয়া মানেই হচ্ছে দূষণে ভরা পাতা খাওয়া। তাতে লাভের চেয়ে ক্ষতি হচ্ছে বেশি।

শজনে পাতার উপকারিতা:

  • শজনে পাতা কোলেস্টেরলের মাত্রা ও বিভিন্ন প্রদাহ কমাতে এবং হৃদ্‌রোগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে।
  • শজনে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের ভালো উৎস, যা ফ্রি র‌্যাডিক্যালের কারণে হওয়া ক্ষতি থেকে শরীরকে রক্ষায় সাহায্য করতে পারে।
  • শজনে আয়রনের ভালো উৎস,যা লোহিত রক্তকণিকা গঠনের জন্য অপরিহার্য খনিজ।
  • শজনের সবুজ পাতায় থাকে ক্লোরোফিল যা শরীরের তাপ ঠিক রাখতে সহায়তা করে, যে কারণে অতিরিক্ত চিনি রক্তে না রেখে কোষে পাঠিয়ে দেয়। ফলে রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • সবুজ শজনের পাতায় থাকা ক্লোরোফিল অতিরিক্ত চিনি রক্তে না রেখে কোষে পাঠিয়ে দেয় যা ফলে উচ্চ রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • শজনে খাদ্য আঁশের একটি ভালো উৎস। ফলে এটি হজম-প্রক্রিয়াকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করতে পারে।
  • দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ হৃদ্‌রোগ, ক্যানসার ও আর্থ্রাইটিসসহ বেশ কয়েকটি রোগের সঙ্গে যুক্ত। শজনে এ ধরনের প্রদাহ রোধ করতে সহায়তা করে।

শজনের প্রদাহবিরোধী বৈশিষ্ট্য বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসছে। এমন স্বাস্থ্যগুণের মরিঙ্গা বা শজনে খাওয়া উচিত জেনে-বুঝে।