বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক কচ্ছপের ১৯০তম জন্মদিন পালন

ফরাসী সমর নায়ক নেপোলিয়নের মৃত্যুর কিছু দিন পরেই জন্ম হয় তার। প্রাতিষ্ঠানিক তথ্য মতে, ডাঙার জীবিত প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে বয়সী প্রাণী এটি। বলছি সেশেলস জায়ান্ট জোনাথন এর কথা। এটি মূলত একটি পুরুষ কচ্ছপ।

কচ্ছপ জোনাথনের এ বছর ১৯০তম জন্মদিন উদযাপন করছে। দক্ষিণ আটলান্টিকের সেন্ট হেলেনায় যেখানে পরাজিত ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন ১৮২১ সালে নির্বাসনে মারা গিয়েছিলেন।

শেল এর (ওপরের আবরণ) পরিমাপের উপর ভিত্তি করে ধারণা করা হয় ১৮৩২ সালের দিকে জোনাথন ডিম থেকে বাচ্চা হয়েছিল। এর ৫০ বছর পরে জোনাথনকে সেশেলস থেকে যুক্তরাজ্যের সেন্ট হেলেনা অঞ্চলে আনা হয়েছিল।

সেন্ট হেলেনা গভর্নরের সরকারী বাসভবনের প্ল্যান্টেশন হাউসে আরামদায়ক অবসর জীবনযাপন করে জোনাথন। যেখানেই তার ১৯০তম জন্মদিনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের অঞ্চলের সেন্ট হেলেনায় যুক্তরাজ্যের গভর্নরের অফিসিয়াল বাসভবন প্ল্যান্টেশন হাউসের লন দিয়ে হামাগুড়ি দিচ্ছে জোনাথন। ২০১৭ সালের ২০ শে অক্টোবর তোলা। (এএফপি)

জন্মদিন উপলক্ষ্যে বিশেষ একটি স্ট্যাম্পও ইস্যু করা হয়। পুরো সপ্তাহজুড়ে চলে অনুষ্ঠান। জোনাথনের পছন্দের খাবার দিয়ে তৈরি একটি “জন্মদিনের কেক”। ।

বিশেষ করে গাজর, লেটুস, শসা, আপেল ও নাশপাতি খুব পছন্দের খাবার। ২০১৭ সালের এক সাক্ষাৎকারে এমন তথ্য জানান জোনাথনকে সেবা করা ব্যক্তিরা। জোনাথনের বয়স ১৯০ বছর হলেও এমা নামে ৫০ বছর বয়সী এক নারী কচ্ছপের প্রতি তার বেশ আকর্ষণ। দুজন প্রায়ই মেলামেশা করে।

তৎকালীন গভর্নর লিসা ফিলিপস বলেছিলেন, ” জোনাথন এখনও নারী কচ্ছপদের উপভোগ করেন এবং আমি তাকে এমার সাথে নিয়মিত থাকতে দেখেছি এবং এমার চারপাশে গিয়ে ডাকতে শুনেছি।

লিনা ফিলিপস আরো জানায়, ” জোনাথন যখন এটি করতো তখন আমাকে তার উপর নজর রাখতে হবে এমন কোন বাধা ধরা নিয়ম ছিল না। কারণ আমি গভর্নর থাকাকালে এটি আমার কাজের বিবরণে ছিল না।”

বয়স সেন্ট হেলেনা গভর্নরের সরকারী বাসভবনের প্ল্যান্টেশন হাউসে আরামদায়ক অবসর জীবনযাপন করছে জোনাথন। যেখানেই তার ১৯০তম জন্মদিনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। (এএফপি)

অবসরপ্রাপ্ত পশুচিকিৎসক ও জোনাথনের প্রধান পরিচর্যাকারী জো হলিন্স জানান, এই বছরের শুরুতে জোনাথনকে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক জীবন্ত ডাঙার প্রাণী হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস।

এছাড়া সর্বকালের সবচেয়ে বয়স্ক কচ্ছপ হিসাবেও স্থান পায় জনাথন। ১৮৩২ সালে জন্ম নেয়া জর্জিয়ান যুগের এই কচ্ছপ বিশ্বের অনেক পরিবর্তনের স্বাক্ষী বলেও জানান জো হলিন্স।

“বিশ্বযুদ্ধ, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের উত্থান ও পতন, বহু গভর্নর, রাজা ও রাণীর শাসনামলের জীবন্ত সাক্ষী জোনাথন। জোনাথন এখানে এসে নিজেকে বছরের পর বছর উপভোগ করছে।’’

যদিও সেন্ট হেলেনা কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই জোনাথনের মৃত্যুর জন্য পরিকল্পনা তৈরি করে রেখেছে। তার মৃত্যুর পরে শেলটি পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করা হবে। জোনাথনের শরীরের উপরের আবরণ হতে পারে গবেষণার কোন উপজীব্য।

তথ্যসূত্র: এএফপি ও আরব নিউজ