অ্যাপল

গোপনে এআই সার্চ টুল তৈরি করছে অ্যাপল

বিশ্ববিখ্যাত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল গোপনে একটি নতুন অভ্যন্তরীণ দল গঠন করেছে। দলের নাম দেয়া হয়েছে ‘আনসার, নলেজ এন্ড ইনফরমেশন (একেআই)’। এই দলের লক্ষ্য হল একটি উন্নতমানের এআই-চালিত সার্চ ইঞ্জিন তৈরি করা, যা ওপেনএআই-এর চ্যাটজিপিটি বা পারপ্লেক্সিটির মতো প্রযুক্তির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম হবে।

অ্যাপল এই দল গঠন করেছে ২০২৫ সালের শুরুতে। বর্তমানে তারা একটি নতুন ধরনের ‘আনসার ইঞ্জিন’ নিয়ে কাজ করছে। এটি সাধারণ-জ্ঞান ভিত্তিক প্রশ্নের সরাসরি ও প্রাসঙ্গিক উত্তর দিতে পারবে। প্রতিষ্ঠানটির দীর্ঘদিনের সহকারী সেবা সিরি-এর বাইরেও অ্যাপল এখন আলাদাভাবে এআই-চালিত একটি সার্চ অভিজ্ঞতা তৈরির উদ্যোগ নিচ্ছে।

এ উদ্যোগের নেতৃত্বে রয়েছেন রবি ওয়াকার, যিনি পূর্বে সিরি বিভাগের প্রধান ছিলেন। তার তত্ত্বাবধানে একেআই টিম বর্তমানে অ্যাপল-এর ভবিষ্যৎ এআই রোডম্যাপ বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছে।

আরো পড়ুন : ঘরের সব কাজ করবে অ্যাপলের রোবট

বর্তমানে অ্যাপলের ডিভাইসে ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে রয়েছে গুগল, যার জন্য প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবছর প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার আয় করে থাকে। তবে এই চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এখন চলছে এন্টিট্রাস্ট তদন্ত। অনেকেই মনে করছেন, অ্যাপল নিজস্ব সার্চ প্রযুক্তি গড়ে তুলে গুগল-এর ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আনতে চাইছে।

অ্যাপলের এই নতুন ‘আনসার ইঞ্জিন’ ভবিষ্যতে সিরি, সাফারি ও স্পটলাইটের মধ্যেও যুক্ত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর ফলে ব্যবহারকারী আর তৃতীয় পক্ষের এআই প্ল্যাটফর্মের ওপর নির্ভর না করে অ্যাপলের নিজস্ব ইকোসিস্টেমে থেকেই প্রশ্নের উত্তর পাবেন।

গত বছর অ্যাপল জানিয়েছিল, তারা আলাদাভাবে কোনো চ্যাটবট তৈরি করবে না, বরং চ্যাটজিপিটির মতো তৃতীয় পক্ষের এআই টুল ব্যবহার করবে। কিন্তু একেআই টিমের এ কাজ থেকে বোঝা যাচ্ছে, প্রতিষ্ঠানটি এখন নিজস্ব জেনারেটিভ এআই টুল তৈরির দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

এছাড়াও অ্যাপল সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছে, তারা এআই খাতে বড় পরিসরে বিনিয়োগ বাড়াবে ও প্রয়োজনে অন্যান্য এআই প্রতিষ্ঠান অধিগ্রহণ করবে। একেআই টিম সেই কৌশলেরই একটি বাস্তব রূপ।

অ্যাপলের এআই সংক্রান্ত এ নতুন পদক্ষেপ ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠানটির প্রযুক্তিগত কাঠামোয় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে। একেআই টিমের উন্নয়ন সফল হলে, তা সিরির সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে নতুন এক প্রজন্মের এআই সহকারী ও সার্চ টুল হিসেবে কাজ করতে পারবে। একইসঙ্গে এটি গুগলের সঙ্গে থাকা দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক সম্পর্ককেও পুনর্বিবেচনায় আনতে পারে।

সূত্র : রয়টার্স ও দ্য ইকোনোমিক টাইমস