ভিডিও গেম

সর্বকালের সেরা ১০ ভিডিও গেম প্রিক্যুয়েল

ভিডিও গেমস-এর জগতে প্রিক্যুয়েলের যেমন সুনাম আছে তেমনি দুর্নামও। প্রিক্যুয়েল গেমগুলো সাধারণত উন্নত প্রযুক্তি ও ডেভেলপমেন্ট টুলের সুবিধা পায়, ফলে সেগুলো দেখতে ও খেলতে মূল গেমের চেয়েও ভালো হয়।

একটি প্রিক্যুয়েল শুধু চমৎকার গ্রাফিক্স বা গেমপ্লের জন্য স্মরণীয় তা কিন্তু নয়। সেটি আমাদের প্রিয় মূল গেমগুলোর গল্পকে নতুনভাবে উপলব্ধি করায়, চরিত্র ও দৃশ্যের গভীরতা বাড়ায়। কিছু ক্ষেত্রে এগুলোই সিরিজের সেরা গেম হিসেবে বিবেচিত হয়।

এ তালিকার গেমগুলো বাছাই করা হয়েছে শুধু প্রযুক্তিগত ও গেমপ্লে দক্ষতার জন্য নয়, বরং কীভাবে তারা মূল সিরিজের গল্পকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে তার জন্যও।

১০. ব্যাটম্যান : আর্খাম অরিজিন্স
আর্খাম সিটি ও আর্খাম নাইট–এর মধ্যে অপেক্ষার ফাঁক পূরণের জন্য প্রকাশিত এ গেমের ঘটনা ঘটে প্রথম গেমের আট বছর আগে, বড়দিনের রাতে। ২৭ বছর বয়সী ব্যাটম্যানকে হত্যা করতে ব্ল্যাক মাস্কের পক্ষ থেকে ৫০ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়।

সেই মিশনে নামে আটজন ভয়ঙ্কর ঘাতক, যার মধ্যে আছে বেন, ডেথস্ট্রোক ও ডেডশট। এখানেই প্রথমবারের মতো গথামে আবির্ভূত হয় জোকার। গেমটি তৈরি করেছে ডাব্লিউবিগেম্স্ মন্ট্রিল। গেমটি ২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর মুক্তি পায়।

ব্যাটম্যান : আর্খাম অরিজিন্স
ব্যাটম্যান : আর্খাম অরিজিন্স

৯. গড অব ওয়ার : চেইন্স অব অলিম্পাস
পিএসপিতে প্রকাশ পেলেও গল্প ও স্কেলে এটি মূল কনসোল ট্রিলজির সমান। ২০০৫ সালের গড অব ওয়ার–এর প্রিক্যুয়েল হিসেবে এটি ক্রাটোসের আন্ডারওয়ার্ল্ড যাত্রা ও দেবতাদের প্রতি তার ঘৃণার সূচনা দেখায়।

গেমটি তৈরি করেছে রেডি এট ডন ও প্রকাশ করেছে সনি কম্পিউটার এন্টারটেনমেন্ট। এটি পিএসপি প্ল্যাটফর্মে খেলা যায়। গেমটি ৪ মার্চ ২০০৮ তারিখে মুক্তি পায়।

আরো পড়ুন : গোপনে এআই সার্চ টুল তৈরি করছে অ্যাপল  

৮. সুপার মারিও ওয়ার্ল্ড ২: ইয়োসিস আইল্যান্ড
নিন্টেন্ডোর মারিও টাইমলাইনে বড় গুরুত্ব না দিলেও, এই গেমে দেখা যায় কিভাবে ইয়োশির দল বেবি মারিওকে বাঁচায়, পরে বেবি লুইজিকে উদ্ধার মিশনে নামে। ন্যারেটিভের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে অনুসন্ধান ও স্বাচ্ছন্দ্যময় গেমপ্লে।

হাতে আঁকা মার্কার-স্টাইল গ্রাফিক্স ও কোজি কন্ডোর অবিস্মরণীয় সাউন্ডট্র্যাক এটিকে এসএনইএস যুগের এক চিরস্মরণীয় বিদায়ী গেম বানিয়েছে। গেমটি মুক্তি পেয়েছিল ৪ অক্টোবর ১৯৯৫।

৭. ডিভাইনিটি : অরিজিনাল সিন
২০০২ সালের ডিভাইনিটি এর এক সহস্র বছর আগে সেট করা আরপিজি–তে প্রথমবার সোর্স ম্যাজিকের বিপদ ও লোভের গল্প ফুটে ওঠে। এলিমেন্টাল-ভিত্তিক টার্ন-বেসড কমব্যাট ও মুক্ত কুয়েস্ট ডিজাইনের কারণে সিরিজটি সাধারণ পর্যায় থেকে সোজা শীর্ষস্থানীয় আরপিজি–তে উন্নীত করে, যা পরবর্তীতে অরিজিনাল সিন ২ ও বালদুর্স গেট –এর ভিত্তি তৈরি করে। গেমটি ২০১৪ সালের ৩০ জুন মুক্তি পায়।

ডেভিল মে ক্রাই ৩
ডেভিল মে ক্রাই ৩

৬. ডেভিল মে ক্রাই ৩ : দান্তেস এওয়েকনিং
প্রথম গেমের কয়েক বছর আগের গল্পে ফিরে গিয়ে ডেভেলপাররা ডান্টেকে তার পুরোনো কুল ও আত্মবিশ্বাসী চরিত্রে ফিরিয়ে আনেন। এখানে দেখা যায় তার যমজ ভাই ভার্জিলের যৌবনকালও।

গেমটি তার দুর্দান্ত চ্যালেঞ্জিং গেমপ্লে, নতুন কমব্যাট স্টাইল ও স্টাইলিশ কম্বো সিস্টেমের জন্য ভক্তদের হৃদয় জয় করে। গেমটি তৈরি করেছে ক্যাপকম প্রোডাকশন স্টুডিও ১ ও প্রকাশ করেছে ক্যাপকম। এটি প্লে-স্টেশন ২ প্ল্যাটফর্মে খেলা যায়। গেমটি ২০০৫ সালের ১ মার্চ মুক্তি পায়।

হেইলো : রিচ

৫. হেইলো : রিচ
প্রথম হেইলোর ঠিক আগের সময়ের সেট। এখানে মাস্টার চিফের বদলে নোবেল টিম নামের এক স্পার্টান ইউনিটকে দেখা যায়, যারা একটি গ্রহে যাওয়ার চেষ্টা করে। তাদের আত্মত্যাগই পরবর্তীতে হেইলো : কম্ব্যাট ইভল্ভড–এর ঘটনা শুরু করে। গেমটির সমাপ্তি, নোবল সিক্সের শেষ লড়াই হেইলো সিরিজের অন্যতম কিংবদন্তি মুহূর্ত।

গেমটি তৈরি করেছে বানজি আর প্রকাশ করেছে মাইক্রোসফট গেম স্টুডিওস। এটি এক্সবক্স ৩৬০ প্ল্যাটফর্মে খেলা যায়। গেমটি ২০১০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মুক্তি পায়।

৪. ইয়াজুকা 0
প্রথম ইয়াজুকা–এর প্রায় দুই দশক আগের কাহিনিতে কিরিউ কাজুমা ও মাজিমা গোরোর তরুণ বয়স দেখা যায়। একটি ছোট জমি ঘিরে শুরু হওয়া বিশাল গ্যাং ও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের গল্প এটি। প্রিক্যুয়েল হলেও নতুন খেলোয়াড়দের জন্য সিরিজে প্রবেশের সেরা সূচনা বিন্দু।

গেমটি তৈরি করেছে রিউ গা গোতোকু স্টুডিও, প্রকাশ করেছে সেগা। এটি প্লে-স্টেশন ৩ ও প্লে-স্টেশন ৪ প্ল্যাটফর্মে খেলা যায়। গেমটি ২০১৭ সালের ২৪ জানুয়ারি মুক্তি পায়।

৩. ডিউস এক্স : হিউম্যান রেভল্যুশন
প্রধান চরিত্র অ্যাডাম জেনসেন যান্ত্রিক অঙ্গ প্রতিস্থাপনের পর জড়িয়ে পড়ে সমাজের অভিজাত ও বঞ্চিত শ্রেণির দ্বন্দ্বে। প্রিক্যুয়েল হিসেবে এটি শুধু ষড়যন্ত্রমূলক কাহিনী নয়, বরং অগমেন্টেশন-নির্ভর ভবিষ্যৎ সমাজের নৈতিক প্রশ্নও তোলে।

গেমটি তৈরি করেছে আইডোস মন্ট্রিয়াল। গেমটি প্রকাশ করেছে স্কয়ার এনিক্স ইউরোপ। এটি পিসি, প্লে-স্টেশন ৩, এক্সবক্স ৩৬০ ও উই ইউ প্ল্যাটফর্মে খেলা যায়। গেমটি ২০১১ সালের ২৩ আগস্ট মুক্তি পায়।

মেটাল গিয়ার সলিড ৩: স্নেক ইটার

২. মেটাল গিয়ার সলিড ৩ : স্নেক ইটার
এখানে সলিড স্নেকের বদলে দেখা যায় নেকেড স্নেককে (ভবিষ্যতের বিগ বস), যার মিশন ও বিশ্বাসঘাতকতার গল্প পুরো মেটাল গিয়ার সিরিজের ভিত্তি তৈরি করে। জঙ্গল-ভিত্তিক ওপেন স্টেলথ ডিজাইন ও আবেগঘন কাহিনীর জন্য এটি সিরিজের অন্যতম সেরা গেম।

গেমটি তৈরি করেছে কোনামি কম্পিউটার এন্টারটেইনমেন্ট জাপান, প্রকাশ করেছে কোনামি। এটি প্লে-স্টেশন ২ প্ল্যাটফর্মে খেলা যায়। গেমটি ২০০৪ সালের ১৭ নভেম্বর মুক্তি পায়।

১. রেড ডেড রিডেম্পশন ২
গেমপ্লে, নির্মাণ ও গল্প সবদিক থেকেই এটি মূল রেড ডেড রিডেম্পশন এর চেয়ে উন্নত। আর্থার মরগান এর জীবনের শেষ অধ্যায়, তার গ্যাংয়ের পতন ও জন মার্সটনের হাতে গল্প হস্তান্তর, সব মিলিয়ে এটি প্রিক্যুয়েলের সেরা উদাহরণ।

গেমটি তৈরি ও প্রকাশ করেছে রকস্টার গেমস। এটি প্লে-স্টেশন ৪, এক্সবক্স ওয়ান ও পিসি প্ল্যাটফর্মে খেলা যায়। গেমটি ২৬ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে মুক্তি পায়।

সূত্র : আইজিএন ডট কম