অফ বিট রিলিজিয়ন

যে পার্কে শোভা পাচ্ছে পবিত্র কোরআনের ঘটনাবলি

বিশ্রাম ও চিত্ত বিনোদনের জন্য মানুষ পার্কে যায়। পার্কে গিয়ে আনন্দ উপভোগ করার মতো বিশ্বজুড়ে এমন অনেক পার্ক রয়েছে।

তবে এই ভিডিওতে ব্যতিক্রমী একটি পার্ক সম্পর্কে আমরা জানবো, যেটি মহান আল্লাহ তালার কুরআনের আলোকে তৈরি। যে পার্কে পবিত্র কোরআনে বর্ণিত পাহাড় সাগর গুহাসহ বিভিন্ন ঘটনাবলি সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

কোরআনে কারিমের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এটি বিশ্বের প্রথম কোরআনিক পার্ক। এর মাধ্যমে দর্শনার্থীরা কোরআনে কারিম সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাচ্ছেন। এই পার্ক ইসলাম ও পবিত্র কোরআন সম্পর্কে দর্শনার্থীদের আগ্রহী করে তুলছে। বিশেষ করে অমুসলিমদের।

নান্দনিক এই কোরানিক পার্কটি মধ্যপ্রাচ্যের মরুভূমির দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরে অবস্থিত। ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ পার্কটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। পার্কটি উদ্বোধনের পর থেকে কোরআনে কারিমে বর্ণিত ঘটনাসমূহ দেখতে হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেন প্রতিদিন।

৬৪ হেক্টর জমির ওপর নির্মিত এই পার্কটি নির্মাণে ২০০ মিলিয়ন দিরহামের বেশি ব্যয় হয়। পার্কটির ভেতরে অনেক আকর্ষণীয় কারুকাজ রয়েছে।

এগুলোর মধ্যে কাঁচের দেয়ালে ঘেরা গ্রিনহাউজ ও কেভ অব মিরাকল বা অলৌকিক গুহা সবচেয়ে আকর্ণীয় স্থান।

কাঁচের দেয়ালের ঘরে রয়েছে কোরানে ও সুন্নায় বর্ণিত ২৯ প্রকারের ফল-ফলাদী ও উদ্ভিদ। এখানে আছে জইতুন, কলা ও আঙ্গুরের গাছ।

কোরানে বর্ণিত পৃথিবীর সবচেয়ে দামি মসলা জাফরানসহ রয়েছে শসা, রসুন, কালো জিরা গাছও।

ক্যাভ অব মিরাকল বা অলৌকিক গুহায় লোহিত সাগরে হযরত মুসা (আ) ও ফেরাউনের যুদ্ধ, সোলায়মান (আ.) ও হুদহুদ পাখির ঘটনা এবং বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ সা. এর চাঁদ দুই ভাগ করার মতো ঘটনাবলিসহ কোরানে উল্লেখিত অলৌকিক ৭টি ঘটনা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

আগত দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে কোরআনের প্রাসঙ্গিক আয়াত ও ঘটনা লিখে দেওয়া হয়েছে প্রতিটি স্থাপনার পাশে।

অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে পার্কে রয়েছে ডিজিটাল থিয়েটার। যেখানে কোরআনের বিভিন্ন ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত ডকুমেন্টারি ও ভিডিও দেখানো হয়।

কোরানিক পার্কে মোট ১৩টি বাগান রয়েছে। পাশাপাশি এতে কৃত্রিম হ্রদ ও পাহাড় তৈরি করা হয়েছে। এই পার্কের সবুজ মনোরম ও ঐতিহাসিক দৃশ্য দর্শনার্থীদের হৃদয়ে প্রশান্তি দিয়ে যাচ্ছে।

নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক বিশ্বের প্রভাবশালী সাময়িকী টাইম ম্যাগাজিন দুবাইয়ের কোরানিক পার্ককে পর্যটকদের কাঙ্খিত ১০০ গন্তব্যের অন্যতম স্থান হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।

পবিত্র কুরআনুল কারীম ও হাদিস শরীফে যে সমস্ত নোহর এর কথা বলা হয়েছে। সেই সব নোহর এখানে রয়েছে।

তা ছাড়াও যে সমস্ত গুহার কথা পবিত্র কুরআনুল কারীম এবং হাদীস শরীফে রয়েছে। সেইসব ঘর আদলে এখানে অনেকগুলো গুহার আকৃতি দেয়া হয়েছে।

পার্কটির দ্বিতীয় গেটে রয়েছে ওয়ান কফি হাউজ নামে একটি কফি শপ, যেখানে কফির পাশাপাশি চকলেট ও বিভিন্ন ধরনের খাবার পাওয়া যায়।

পার্কটির বিশাল একটি অংশজুড়ে আলাদাভাবে রয়েছে জগিং ট্র্যাক ও সাইক্লিং ট্র্যাক। একই সাথে রয়েছে জিম করার বিভিন্ন ইকুইপমেন্ট।

এগুলো ফ্রিতে ব্যবহার করা যায়। ছোটদের জন্যও রয়েছে প্লে গ্রাউন্ডের ব্যবস্থা।

বিশাল আয়তনের এই পার্কে ঢুকতে দুটি প্রবেশ পথ রয়েছে। এর মধ্যে দ্বিতীয় প্রবেশ পথটি বেশি ব্যবহৃত হয়।

কোরানিক পার্কের জন্য কোন প্রবেশ মূল্য লাগে না। তবে গ্রিনহাউস ও অলৌকিক গুহায় ঘুরার জন্য ৫ দিরহাম করে খরচ করতে হয়।

উপর থেকে দেখলে মনে হয় পুরো এলাকাটি সবুজের সমারোহ। পুরো কোরানিক পার্কে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে।

মজার ব্যাপার হচ্ছে কিছুক্ষণ পরপর গাছের নিচে বি ও সি টাইপসহ বিভিন্ন চার্জার যুক্ত করা আছে। যে কেউ চাইলে মোবাইলে বা ল্যাপটপসহ বিভিন্ন ডিভাইসে চার্জ দিতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অস্কার ২০২৩: সেরা সিনেমা ছবি থেকে সেরা অভিনেতা-অভিনেত্রী 

শেষ হল ৯৫তম অস্কারেরর ঘোষণা। কোন শিল্পীর হাতে উঠল কোন […]

বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক কচ্ছপের ১৯০তম জন্মদিন পালন

ফরাসী সমর নায়ক নেপোলিয়নের মৃত্যুর কিছু দিন পরেই জন্ম হয় […]

%d bloggers like this: