নারীদের সুস্থতার ৮ বিষয়

বেশিরভাগ নারীই সংসার, কর্মজীবন, সামাজিক জীবন, দায়িত্ব-কর্তব্য, এসবের চাপে নিজেদের যত্ন নেওয়ার বিশেষ সময় পান না।

এর ফলে একের পর এক মানসিক ও শারীরিক সমস্যা লেগেই থাকে। তবে কিছু মৌলিক বিষয় মনে রাখলে নারীদের স্বাস্থ্য একেবারে রোগমুক্ত থাকবে।

সার্বিকভাবে সুস্থ থাকতে প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় কিছু নিয়ম মেনে চলা খুবই জরুরী। সুস্বাস্থ্য ধরে রাখার জন্য নারীরা কোন কোন বিষয় মাথায় রাখবেন।

প্রতিদিন শরীরচর্চা:

একজন নারীর সুস্থ থাকার সবচেয়ে কার্যকর উপায় প্রতিদিন শরীর চর্চা করা। যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন দিনের কিছুটা সময় রাখুন শরীরচর্চায় বা ব্যায়ামের জন্য।

বিশেষ করে সকালে শরীর চর্চা করলে আরও বেশি উপকার মিলবে। শারীরিক ও মানসিকভাবে ফিট থাকলেই আয়ু বাড়ে।

তাছাড়া, প্রতিদিন ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যা, ক্যান্সার এবং আরও অনেক রোগের ঝুঁকি কমায়।

যখন ব্যায়াম করা হয়, তখন হ্যাপি হরমোন নিঃসৃত হয়। এটি স্ট্রেস বাস্টার হিসেবে কাজ করে, হতাশা এবং উদ্বেগ কমায়। আর, দ্রুত ওজন কমাতে ব্যায়ামের চেয়ে কার্যকর পদ্ধতি নেই বললেই চলে!

স্বাস্থ্যকর ডায়েট:

খাবার থেকেই এনার্জি পাওয়া যায়। প্রতিদিনের ডায়েটে ফাইবার, আয়রন, খনিজ, প্রোটিন, ফলিক অ্যাসিড ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাদ্য অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করুন।

এসব খাবার একজন নারীর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান বলে মনে করা হয়। বাইরের খাবার বেশি খাবেন না।

প্রসেসড ফুড, জাঙ্ক ফুড, অতিরিক্ত লবণ ও মিষ্টি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো। আর যাদের ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স আছে তারা দুগ্ধজাত খাবার এড়িয়ে চলুন।

কোলেস্টেরল পরীক্ষা:

অত্যধিক কোলেস্টেরল রক্তনালীগুলো বন্ধ করে দিতে পারে। ফলে গুরুতর রীরিক সমস্যা দেখা দেয়। তাই কম চর্বি, কম কোলেস্টেরলযুক্ত খাদ্য খান।

ধূমপান এড়িয়ে চলুন এবং প্রতিদিন ব্যায়াম করুন। এতেই নিয়ন্ত্রণে থাকবে কোলেস্টেরল।

হার্টের যত্ন:

শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হার্ট। তাই হার্টের সঠিক যত্ন নেওয়া এবং নিয়মিত পরীক্ষা করা বিশেষ প্রয়োজন।

রক্তচাপ, রক্তে শর্করার মাত্রা, বডি মাস ইনডেক্স এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেই হার্টও অনেকটাই সুস্থ থাকবে। আর, এসব কিছুর পরিবর্তন উপেক্ষা করা মানে নিজের স্বাস্থ্যের অবহেলা করা।

ধুমপান ও মদ্যপান নয়:

সুস্থ-সবল থাকতে ধূমপান ও মদ্যপানকে না বলতে হবে। সার্ভিকাল ও ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারের চেয়ে ফুসফুসের ক্যান্সারে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে অনেক বেশি।

এছাড়া যেসব নারী ধূমপান করেন তাঁরা খুব কম বয়সেই হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারেন।

ইউটিআই সংক্রমণ:

মূত্রনালীর সংক্রমণ (Urinary tract infections) সব বয়সের মেয়েদের মধ্যেই হতে পারে। এই সমস্যা দেখা দিলেই দ্রুত পরীক্ষা করান। সঠিক ওষুধ ও প্রচুর পরিমাণে তরল জাতীয় খাবার গ্রহণ এই সমস্যা দ্রুত নিরাময় করতে পারে।

থাইরয়েড পরীক্ষা:

থাউরয়েডের হাইপোথাইরয়েডিজমের কারণে পিরিয়ডের সমস্যা, ওজন বাড়া-কমা, ত্বকে লোম ও গর্ভধারণের সমস্যা হতে পারে। তাই সময় মতো প্রত্যেক নারীরই থাইরয়েড টেস্ট করানো উচিত।

নিয়মিত পরীক্ষা করান:

আজকাল কম-বেশি সব নারীই ঋতুস্রাবের সমস্যায় ভোগেন। অনিয়মিত ও যন্ত্রণাদায়ক পিরিয়ড, Premenstrual syndrome, পলিসিস্টিক ওভারি, গর্ভধারণে সমস্যা, অপরিকল্পিত গর্ভধারণ, গর্ভপাত ইত্যাদি সমস্যায় ভোগেন। সময় মতো গাইনোকোলজিকাল পরীক্ষা করালে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব।

এসব পরামর্শ মেনে চললে নানান সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। যারা অবহেলা করবেন তারা পস্তাবেন। তাই শরীর নিয়ে অবহেলা না করে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করাই উত্তম।

তথ্যসূত্র: বোল্ড স্কাই