শুরু হয়ে গেছে শীতের মৌসুম। শীতকালে ভ্রমণ, উৎসব ও ছুটি কাটায় বিশ্ববাসী। বিশেষ করে বড়দিন ও নতুন বছরকে বরণ ও উদযাপনের জন্য মুখিয়ে থাকে আপামর জনতা। শীত মানেই শুষ্কতা ও রুক্ষতার সময়। এই সময় ত্বক রুক্ষ হয়ে যায় ও শরীরে রোগ ব্যধির প্রবণতা বাড়তে থাকে। এই সময়ে নিজেকে ফিট রাখা অত্যন্ত জরুরি।
ঋতু বদলের ফলে স্বাস্থ্য সমস্যার প্রবণতা প্রবলভাবে দেখা দেয়। তাই আনন্দ-উৎসবে মাতয়ারার সাথে সাথে এই সময় নিজের স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে হবে। কারণ, শরীর নতুন জলবায়ুর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে সময় নেয়।
শীতে আবহাওয়ার আকস্মিক পরিবর্তনে অনেকেই অসুস্থ হয়। বিশেষত গ্রীষ্মপ্রধান দেশগুলোতে শীতের সময় তাপমাত্রা যথেষ্ট হ্রাস পায়। ফলে, হঠাৎ জলবায়ু পরিবর্তন মানুষজনকে অসুস্থতার দিকে ঠেলে দেয়। ভাইরাল ফ্লু, সর্দি, কাশি, শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত অসুখ, মৌসুমি অ্যালার্জি শীতের কমন রোগ। তাই ঋতু বদলের সময় খুব সতর্ক থাকতে হবে যাতে স্বাস্থ্য সমস্যা অনায়াসে এড়ানো যায়। তাই এই শীতের মৌসুমে ফিট ও সক্রিয় থাকার জন্য রইল ৯টি উপায়-
প্রচুর পরিমাণে পানি পান:
শীতকালে জলবায়ু রুক্ষ ও শুষ্ক হওয়ায় ত্বক ফাটতে থাকে। তাই ত্বক ভাল রাখতে প্রচুর পরিমানে পানি পান করতে হবে। ডিহাইড্রেশন ও ত্বকের শুষ্কতা থেকে দেহকে সুরক্ষা করে পানি। তাই, দিনে অন্তত ৫ থেকে ৬ লিটার পানি পান করতে হবে।
পান করুন ভেষজ চা:
পানীয় হিসেবে পান করতে হবে ভেষজ চা। এমন অনেক ধরনের ভেষজ চা রয়েছে যা দেহকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। লেবু ও ক্যামোমিলের মতো ভেষজ চা স্নায়ুকে শান্ত করে একই সাথে শরীরকে শিথিল করে। ফলে, হতাশা, উদ্বেগ কমে ভাল ঘুম হয়।
ভিটামিন জাতীয় ঔষধ খান:
ডাক্তারেরর পরামর্শ নিয়ে ভিটামিন জাতীয় ঔষধ খেতে পারেন। কারণ, এগুলো দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে একই সাথে ভাইরাসজনিত রোগ থেকে শরীরকে দূরে রাখে।
খাবারে রাখুন মাশরুম:
শীতকালীন খাদ্য তালিকায় অবশ্যই রাখুন মাশরুমের। মাশরুম স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারি। এতে ভিটামিন বি, সি, ডি ও ক্যালসিয়াম,পটাশিয়াম,মিনারেল, আরগোথিওনিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শরীরের বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
খেতে হবে ভিটামিন সি ও জিংক:
শীতকালে স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার ও লেবু জাতীয় ফল এতে হবে। জিঙ্ক জাতীয় খাবার খান। এই খাবারগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাযকরি ভূমিকা পালন করে।
ডায়েটে থাকুক ফলমূল ও শাকসবজি:
শীতে স্বাস্থ্যকর থাকতে চাইলে ডায়েটে রাখুন প্রচুর ফলমূল ও শাকসবজি। কারণ, এগুলোতে থাকা পুষ্টি মানব দেহকে সুস্থ রাখে।
ফাইবারযুক্ত খাবার:
বেশি পরিমাণ ফাইবারযুক্ত খাবার খেতে হবে।আপেল, ওটস ও বাদাম ফাইবার যুক্ত খাবার। এগুলো শরীরের ওজন ও কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করে। ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে লড়াই করে। বয়স্কদের জন্য এগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ খাবার।
ব্যায়াম জরুরি:
শীতকালে প্রতিদিন শারীরিক অনুশীলন করা ভাল। অনুশীলন বা শরীরচর্চা দেহকে উষ্ণ রাখতে সসহায়তা করে থাকে। এছাড়া বিপাক, রক্ত প্রবাহকে উন্নত করে ব্যায়াম।
ঘুমাতে হবে সঠিকভাবে:
শীতে বেশি অলস ও নিদ্রাহীনতা অনুভব করা হয়। তাতে কাজের সময় শরীরে কষ্ট অনুভব হয় বেশি। তাই শীতকালে সময় মতো সঠিক ঘুমের প্রয়োজন। তবেই সতেজ ও চাপমুক্ত থাকা যাবে।
কেবল শীতেই নয়, শীত শেষে বসন্ত আসার সময় ও আমাদের শরীর একই রকমের স্বাস্থ্য সমস্যায় পড়ে। তাই শীত শেষে বসন্তেও নিজেকে ফিট রাখার জন্য আমাদের উপরের পরামর্শগুলো মেনে চলা উচিত।