সাগরের বুকে জেগে ওঠা অন্য রকম এক নিরাপদ ও আধুনিক নগরীর নাম ভাসানচর। আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত অবকাঠামো দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন দেশি ও বিদেশী উন্নয়ন কর্মীরা।
রোহিঙ্গা শরণার্থীরা ভাসানচরে উন্নত জীবনযাপন ও বসবাস করতে পারবে। রোহিঙ্গাদের মানসম্মত জীবন নিশ্চিতে সব ধরনের আয়োজন রয়েছে ভাসানচরে।
বিদ্যুৎ ব্যবস্থা:
ভাসানচরে ২৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য রয়েছে ১ মেগাওয়াট হাইব্রিড সোলার প্যানেল, প্রয়োজনীয় পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন লাইন, একটি ১ মেগাওয়াট জেনারেটর, দুটি ৫০০ কিলোওয়াটসহ মোট ৩টি ডিজেল জেনারেটর।
ভাসানচরে প্রয়োজনীয় জ্বালানি সরবরাহের জন্য ৫০০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন ২টি ফুয়েল ট্যাংক নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে করা হয়েছে বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট। যার মাধ্যমে পুরো ভাসানচরের প্রকল্পে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।
স্যানিটেশন সুবিধা:
কক্সবাজারের সঙ্গে ভাসানচরের স্যানিটেশনের চিত্র আকাশ-পাতাল পার্থক্য। কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে স্যানিটেশন ব্যবস্থা খুবই নাজুক ও অস্বাস্থ্যকর। ভাসানচরে আধুনিক ও উন্নতমানের টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে।
কক্সবাজারে ২০ জনের জন্য ১ টয়লেট ও ৮০ জনের জন্য ১ গোসলখানা আছে। টয়লেট ও গোসলখানা ব্যবহারেরর জন্য দীর্ঘ লাইনে দাড়াতে হয়। তবে ভাসানচরে ১১ জনের জন্য একটি টয়লেট ও ১৬ জনের জন্য ১টি গোসলখানা রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র:
কক্সবাজারের বসতি রোহিঙ্গাদের উপযোগী নয়। সেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা উঁচু-নিচু। প্রতিনিয়ত দুর্যোগের ঝুঁকি। অন্যদিকে ভাসানচরে প্রাকৃতিক কোনো ঝুঁকি নেই। ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস মোকাবিলায় রয়েছে সাইক্লোন শেল্টার। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় প্রতিটি শেল্টার স্টেশনে ১ হাজার করে ১২০টি সেন্টারে ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে।
শেল্টার স্টেশনগুলো এমনভাবে স্টিল, কংক্রিট এবং কম্পোজিট স্ট্রাকচারে তৈরি যা ২৬০ কিলোমিটার গতির ঘূর্ণিঝড় সহ্য করতে সক্ষম। চারপাশে নয় ফুট উঁচু ১৩ কিলোমিটার শক্তিশালী বাঁধ ও ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট তৈরি করা হয়েছে।
এ ছাড়া প্রতিটি সাইক্লোন শেল্টারের নিচতলায় আশ্রয় নিতে পারবে ২শ’ করে গবাদি পশু। এ ছাড়া এখানে ২৪ ঘণ্টাই এখানে বিদ্যুতের ব্যবস্থা আছে।