করোনা ভাইরাস নিয়ে বিশ্বজুড়ে যখন তোলপাড় চলছে ঠিক সেই মূহুর্তে ধূমপায়ীদের সতর্ক করে দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, মানুষের ফুসফুসের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দেয় ধূমপান।
করোনা ভাইরাস ফুসফুসে আক্রমণ করলে মুত্যু ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই ফুসফুসের কার্যকারিতা ধরে রাখতে ধূমপান ত্যাগের পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
গবেষণা বলছে, ইতোপূর্বে যতগুলো ভাইরাস গোটা বিশ্বে আঘাত হেনেছে তার মধ্যে বেশির ভাগ ভাইরাসেই বয়স্করা আক্রান্ত হয়েছেন তুলনামূলক বেশি।
এ নিয়ে গবেষণায় কোন সমাধান না এলেও বিশেষজ্ঞরা ধূমপান ও দূষণের কারণে যুবকদের তরতাজা ফুসফুস এখনও সক্ষমতা হারায়নি বলে ধারণা করছেন।
বায়ো সিকিউরিটি বিভাগের বিশ্লেষণ:
অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলস’স কিরবি ইনস্টিটিউটের বায়ো সিকিউরিটি বিভাগ এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যাদের ফুসফুসজনিত সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য এই ভাইরাস খুবই নির্দয়। শুধু ধূমপান নয়, যেসব দমকল কর্মী দীর্ঘদিন ধরে দাবানল নেভানোর কাজ করছেন তাদের জন্যও দুঃসংবাদ দিচ্ছে এই ভাইরাস।
মেডিসিন বিভাগের বিশ্লেষণ:
এছাড়া অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (এএনইউ) মেডিসিন বিভাগও জানিয়েছে, যদিও করোনাভাইরাস ও ধূমপানের মধ্যে এ পর্যন্ত সরাসরি কোনো যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া যায়নি, তবে ধূমপান অন্যান্য সমস্যা তৈরি করাসহ করোনা মোকাবিলায় মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুস ও হৃদপিণ্ডের রোগসহ অন্যান্য রোগের কারণ ধূমপান। আর এ ধরনের রোগ থাকলে করোনাভাইরাস মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে বলে অধিক মৃত্যু ঝুঁকিতে ধূমপায়ীরা
করোনার হালচাল:
বিশ্বের ১২৭টি দেশে করোনা ভাইরাস ইতোমধ্যে হানা দিয়েছে। বাংলাদেশেও এ ভাইরাসে প্রথম ধাপে ৯ মার্চ-২০২০ তিনজন ও দ্বিতীয় ধাপে ১৪ মার্চ দুইজন আর ১৬ মার্চ আরো তিনজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানানো হয়।
বাংলাদেশে অক্রান্তের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৮ জন। মারা যায়নি একজনও যদিও মারা যেতেও পারেন কেউ কেউ। মৃত্যৃর সংখ্যা বাড়াটাও অস্বাভাবিক নয়।
করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার সংখ্যাও বাড়ছে। যদিও সেটা প্রচারিতত হয় না।
পুরুষের মৃত্যু হার কিছুটা বেশি:
সারা বিশ্বে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৬১২ জন অক্রান্তের বিপরীতে মারা গেছে মাত্র ৬৫১৮ জন। সুস্থ হয়েছেন ৭৭ হাজার ৭৭৬ জন। মৃত্য হার মাত্র ২ শতাংশ। নারীদের তুলনায় পুরুষের মৃত্যুহারও কিছুটা বেশি।
এমনটাই জানিয়েছেন গবেষকরা। এর কারণ হিসেবে তারা বলেছেন, করোনা ভাইরাসের প্রাথমিক উপসর্গ হলো হালকা জ্বর, সর্দি ও কাশি। তবে এটি ফুসফুসকে আক্রমণ করে বসলে ঝুঁকি রয়েছে। তাই বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ফুসফুসের কার্যকারিতা ধরে রাখতে ধূমপান ছেড়ে দেয়া উচিত।
গবেষণায় দেখা গেছে, অতীতের সার্স ও চলমান করোনা ভাইরাসের মতো মহামারীতে শিশুরা অপেক্ষাকৃত কম আক্রমণের শিকার হয়েছে তবে এর সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি।